বাংলায় চীনা ভাষা
শেখার ধারাবাহিক
পাঠে আপনাকে
স্বাগতম।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি
সংখ্যক মানুষের
মাতৃভাষার সাথে যদি
পরিচিত হতে চান,
তাহলে থাকুন আমাদের
সাথে। চলুন প্রথমেই
চীনা ভাষা সম্পর্কে
দু’একটি তথ্য জেনে নিই।
চীনা ভাষার তিনটি
প্রধান উপাদান হচ্ছে
অক্ষর বিন্যাস, ধ্বনি
বিন্যাস এবং ব্যাকরণ।
চীনা ভাষার কোন
বর্ণমালা নেই। আপনি
যে চীনা ভাষা লেখা
দেখেছেন তা আসলে
প্রতিটি আলাদা
আলাদা শব্দ। চীনা শব্দ
বা ক্যারেক্টারকে
আপনি চিত্রলিপি বা
Pictograph বলতে পারেন।
চীনা ভাষা যথাসম্ভব
সঠিকভাবে উচ্চারণ
করতে হয়। না হলে এর
অর্থ পুরোপুরি বদলে
যাবে। বিদেশিদের
সুবিধার্তে চীনা
পন্ডিতগণ চীনা ভাষার
উচ্চারণ ল্যাটিন হরফ
দিয়ে সহজবোধ্যভাবে
উপস্থাপন করেছেন।
ল্যাটিন হরফে লেখা
ফিনইন ছাড়া বাংলায়
চীনা ভাষার উচ্চারণ
লেখা সম্ভব নয়। কারণ
চীনা ভাষার ধ্বনিগুলো
বাংলায় নেই। আমি
শুধুমাত্র আপনাদের
বোঝার সুবিধার্তে
উচ্চারণগুলো
কাছাকাছি বাংলায়
লেখার চেষ্টা করব।
ফিনইন দেখে পড়ার জন্য
ফিনইনের বিপরীতে
উচ্চারণগুলো মনে
রাখতে হবে।
ইংরেজি অক্ষরের
বিপরীতে বাংলায়
আমরা যেমন উচ্চারণ
করি এখানে তার
কিছুটা ব্যতিক্রম আছে।
যেমন ইংরেজিতে ‘বি’
কে আমরা ‘ব’ এর সাথে
তুলনা করতে পারি।
কিন্তু চীনা ফিনইনে
‘বি’ এর উচ্চারণ হবে ‘প’।
আবার ‘ডি’ এর উচ্চারণ ‘ড’
বা ‘দ’ না হয়ে হবে ‘ত’ এর
মতো।
চীনা ভাষার
ধ্বনিবিন্যাসে চারটি
স্বর বা Tone আছে।
এগুলো হচ্ছে প্রথম স্বর বা
উঁচু মাত্রার সমতান স্বর,
দ্বিতীয় স্বর বা
আরোহী স্বর, তৃতীয় স্বর
বা তরঙ্গ স্বর এবং চতুর্থ
স্বর বা অবরোহী স্বর।
এছাড়া আরো একটি টোন
আছে যাকে নিউট্রাল
টোন বলা হয়।
আপনারা সারেগামা
নিশ্চই শুনেছেন।
সেখানে সা রে গা মা
প্রতিটিতে সাউন্ড
লেভেল চেঞ্জ হয়। ঠিক
এরকমই আমি এই টোন
চার্টে ১ থেকে ৫ পর্যন্ত
মার্ক দিয়ে সাউন্ড
লেভেল দেখানোর
চেষ্টা করছি। (ইউটিউব
ভিডিওটি দেখুন)
প্রথম স্বর বা উঁচু মাত্রার
সমতান স্বরে সাউন্ড
লেভেল পরিবর্তন হয় না।
লেভেল ৫ থেকে শুরু করে
৫-এই শেষ, স্বরের কোন
উঠানামা নেই।
দ্বিতীয় স্বরের
ক্ষেত্রে সাউন্ড লেভেল
৩ থেকে শুরু করে ৫ এ
উঠেছে। একটু পরে এর
উদাহরন দিচ্ছি।
তৃতীয় স্বরের ক্ষেত্রে
সাউন্ড লেভেল ২ এ শুরু
হয়ে ৪ এ শেষ হবে। একে
আমরা তরঙ্গ স্বর বলি।
চতুর্থ স্বরের ক্ষেত্রে
সাউন্ড লেভেল ৫ এ শুরু
হয়ে ১ এ শেষ হবে।
আগেই বলেছি, ফিনইনে
চার ধরণের টোনমার্ক
থাকে, সেই মার্ক
অনুযায়ী উচ্চারণ করতে
হবে। যেমন এখানে
দেখুন, প্রথম ā এর উপরে
প্রথম স্বরের চিহ্ন
দেওয়া আছে। এর
উচ্চারণ হবে উঁচু মাত্রার
সমতান স্বরে ‘আ’।
দ্বিতীয় á এর উপরে
দ্বিতীয় স্বরের চিহ্ন
দেওয়া আছে। এর
উচ্চারণ হবে আরোহী
স্বরে ‘আ’। তৃতীয় ǎ এর
উপরে তৃতীয় স্বরের চিহ্ন
দেওয়া আছে। এর
উচ্চারণ হবে তরঙ্গ স্বরে
‘আ’। চতুর্থ à এর উপরে
চতুর্থ স্বরের চিহ্ন
দেওয়া আছে। এর
উচ্চারণ হবে অবরোহী
স্বরে ‘আ’।
উচ্চারণ সঠিক না হলে
চীনা ভাষার অর্থ
পুরোপুরি বদলে যায়। এ
কারণে চীনা ভাষা
চর্চা করার সময়
ফিনইনের উপর
ভালোভাবে নজর
রাখতে হবে।
চীনা ভাষায়
ব্যাকরণের জটিলতা কম।
কর্তা পরিবর্তনের
সাথে সাথে ক্রিয়ার
রূপের কোন পরিবর্তন হয়
না। যেমন 去qù ছ্যুই মানে
হচ্ছে যাওয়া। এই ক্রিয়া
পদটি আমি, তুমি, আপনি
ইত্যাদি কর্তার সাথে
বাংলার মতো যাই,
যাও, যান ইত্যাদি শব্দে
রূপান্তর না হয়ে
অপরিবর্তিত থাকে।
চীনা ভাষায় বাক্য গঠন
করাও সহজ। শব্দের সাথে
শব্দ জুড়ে দিলেই কথা
বলা যায়। যেমন, হাও
(好 hǎo) শব্দের অর্থ
ভালো। এই হাও দিয়েই
অনেক বাক্য তৈরি করা
যায়। যেমন, হাও ঝও (好走
hǎo zǒu) মানে যাওয়া
সহজ, হাও খান (好看 hǎo
kàn) মানে দেখতে সুন্দর,
হাও থিং (好听 hǎo tīng)
মানে শ্রুতিমধুর, হাও
ছ্রি (好吃 hǎo chī) মানে
সুস্বাদু ইত্যাদি।
চীনা ভাষায়
গণনারীতিও অনেক সহজ।
যেমন, কেউ ১ থেকে ১০
পর্যন্ত শিখলে ৯৯ পর্যন্ত
অবলীলায় বলতে
পারবেন। কারণ ১১ হচ্ছে,
দশ-এক, তেমনি ২২ হচ্ছে ২
দশ ২, ৪৩ হচ্ছে ৪ দশ ৩,
এভাবে ৯৯ পর্যন্ত একই
রকম।
আমরা পরের পাঠে কিছু
বাক্য তৈরি করব এবং
প্রাথমিক কথাবার্তা
শরু করব। প্রথম পাঠ বুঝতে
যদি কোন সমস্যা তৈরি
হয়ে থাকে আশা করি
দ্বিতীয় পাঠে তা সহজ
হয়ে যাবে। যদি কোন
প্রশ্ন থাকে তাহলে
কমেন্টস করবেন। ইমেইল
পাঠাতে পারেন:
[email protected]
এই ঠিকানায়।
No responses to বাংলায় চীনা ভাষা শিখুন, পাঠ-১(ধ্বনি ও ধ্বনিচিহ্ন) (উচ্চারণসহ)
Be first Make a comment.